প্লিজজজজজ (খুব চিৎকার করে)
এক মিনিটের মাঝেই উঠে সবাই বলাবলি শুরু করছে।
কি হয়েছে? চিল্লাচ্ছ কেন? রুগিরা এত কষ্ট করে ঘুমাইল অার তুমি চিল্লায়া ঘুমটা ভেঙে দিলা!
এরকম অারো অনেক কথা শুনতে হল।
রোগিদের ঘুম ভেঙে গেছে অামার চিৎকার শুনে তাই খুব খারাপ লাগছিল।
ওদের এত অারামের ঘুমটা ভেঙে দিলাম! নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিল।
.
.
কোন এক কারণে হসপিটালে অাজ থাকতে হবে।
অবশ্য অামি এক রোগির অাত্বীয় হিসেবেই অাছি।কারণ অামি তাকে নিয়েই হসপিটালে অাসছি।যদিও অারো মানুষ সাথে রয়েছে।
কিন্তু, তারা প্রায় সবাই সন্ধ্যার অাগেই চলে গেছেন।
নামকরা সরকারী হসপিটাল এটা।
তো,এখন রোগির সাথে মাত্র দুইজন।অামি অার একজন।সকাল হলেই অামি চলে যাব।
কিন্তু,রাতটা থাকতেই হবে।
অারেকজন যে ছিল সে ঘুমিয়ে পড়ছে অনেক অাগেই।
অামি জেগে অাছি।ঘুমানোর কোন পথ নেই যে ঘুমাব। ভাবছি ফেসবুকে গল্প পড়েই সময়টা কাটিয়ে দিব।কারণ এখন মধ্যরাত।ফোনে যথেষ্ট পরিমাণ চার্জ রয়েছে।
তো অামি অামার মত গল্প পড়ছি।
লাইট গুলো সব অন করা।মধ্যরাতে যদি লাইট অন করা থাকে সেটা কি ভাল লাগে? একদমই না।
অামারও লাগছিল না।ইচ্ছে করছিল সব লাইট গুলো অফ করে দেই।কিন্তু তা সম্ভব না।
.
.
ঘড়িতে সময়টা দেখে নিলাম।
রাত 2টা বেজে 50মিনিট।
নিউজফিডে নতুন একটা গল্প চোখে পড়ল।তাই পড়ার জন্য ক্লিক করলাম।পড়া শুরু করলাম।
হঠাৎ সব লাইট গুলো অফ হয়ে যায়।
জেনারেটর ও চালু করছে না।
ভাবলাম হয়তো কোন প্রবলেম হইছে।
অামি অাবার গল্প পড়ায় মন দিলাম।
একটু পর খেয়াল করলাম।
হয়তো একটা লাইট অন হতে চাচ্ছে।
অামি তবুও সে দিকে না তাকিয়ে অামি অামার মত গল্প পড়ছিলাম।
কিন্তু একটু পর যখন জিনিসটা খুব নাড়াচাড়া করছিল।অামি দ্রুত সে দিকে তাকাইলাম।
দেখলাম অামাদের বেড থেকে ৪টা বেড অাগের বেড টায় অর্থাৎ 55নং বেড টায়।
সাদা কাপড় পড়ে একটা মানুষ নাড়াচাড়া করছে।
অামি ভাবলাম হয়তো কোন নার্স অাসছে।
কিন্তু,পরক্ষণেই মনে হল।
এই বেডে তো কেউ নেই। অাজ বিকাল 4টায় একজন মারা গেছে এখানে।
পাশের বেডের লোকটায় বলছিল সকালেও নাকি এখানে একজন মারা গেছেন।অাবার অন্যপাশের বেডে যিনি ছিলেন তিনি অাজ 4দিন ধরেই এখানে অাছেন তিনি বললেন কালকে অার পরশু দিনও নাকি একজন,একজন মোট দুইজন মারা গেছে।
অামি ভাবলাম হয়তো বেশি সিরিয়াস রোগিদের এই বেডে রাখা হয় যার জন্য সবাই মারা যায় দ্রুত।
.
.
বিকালে একজন মারা যাওয়ার পর নতুন করে অার কাউকে এখানে রাখা হয়নি।তাহলে নার্স কেন অাসবে!অার অাসলেও তো লাইট নিয়ে অাসার কথা।যেহেতু অন্ধকার।
যাইহোক,দেখলাম সাদা কাপড় পড়া মহিলা নাকি পুরুষ বুঝতে পারছিলাম না।তিনি,একবার খাটের এই পাশে অারেকবার ওই পাশে যাচ্ছিলেন।
হয়তো পাশের বেডের কোন মানুষ হবে।
কিন্তু,একটু পর দেখলাম অারেকটা সাদা কাপড় পড়া কেউ অাসল।
অার তখন শুধু সেই বেডটার উপর যেই লাইট টা সেটা অন করা হল।অবাক করার বিষয় হল। লাইট টা শুধু সেই বেডকেই হালকা অালোকিত করে রেখেছে।লাইট অন হওয়ার সাথে সাথেই সেই দুজন কে দেখতে পেলাম। একজনের মুখ স্পষ্ট কিন্তু মাথা অর্ধেক ডেমেজ। অারেকজনের মুখ টা বুঝাই যাচ্ছেনা ,অার চুইয়ে চুইয়ে রক্ত পড়ছে যেন বড় ধরণের কোন এক্সিডেন্ট করছে। কিন্তু,দুজনেরই চোখ গুলো খুব বড় বড়।যেন,চোখ যেখানে থাকে সেখান থেকে বের হয়ে অাসছে।
অামার সাড়া শরীর বরফের মত ঠান্ডা হয়ে গেছে।
কারণ,এরকম মানুষও সুস্থ ভাবে বেঁচে অাছে! অাবার দাড়িয়ে নাড়াচাড়া করছে। অবাক করারই বিষয়।
.
.
একটু পর দেখলাম।বাহির থেকে দুজন লোক সাদা কাপড়ে মোড়ানো কিছু একটা নিয়ে অাসল।
অার তাদের বলছে :
একটু অাগেই মারা গেছে।
এই দুইজনের মুখে হাসি ফুটল।
তাহলে শুরু করা যাক (অস্পষ্ট ভাবে)
একটা ব্যাগ থেকে যারা নতুন অাসছে তারা কিছু বের করল।
অার যখন লাশটার উপর থেকে সাদা কাপড়টা সড়ানো হল অামি স্পষ্ট দেখতে না পারলেও বুঝতে পারলাম অাজ বিকালে যে মারা গেছিলেন এই বেডে, তিনিই এই ব্যাক্তি।
একটা মৃত মানুষ কে মধ্যরাতে অাবার হসপিটালে নিয়া অাইসা কি করছে!! অার অানতেই পারে যদি কোন তদন্তের দরকার পড়ে।কিন্তু তারজন্য এত রাতে! অাবার এই বেডেই!
না কিচ্ছু মাথায় অাসছেনা।কিছু একটা উল্টাপাল্টা হচ্ছে।
.
.
যার মাথা অর্ধেক ডেমেজ সে,
ব্যাগ থেকে একটা চাকুর মত বের করে।
লাশটার বুক বরাবর ডুকিয়ে দিল ।
অার তখনই অাবার চাকুটা বের করে পুণরায় একই কাজ করার জন্য যেই প্রস্তুত হল
অামি অার নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলাম না।
দেহের সব শক্তি দিয়ে খুব জোরে একটা চিৎকার দিলাম।
প্লিজ এটা করবেন না।
প্লিজজজজজ (খুব চিৎকার করে)
এক মিনিটের মাঝেই সবাই বলাবলি শুরু করছে।
কি হয়েছে? চিল্লাচ্ছ কেন? রুগিরা এত কষ্ট করে ঘুমাইল অার তুমি চিল্লায়া ঘুমটা ভেঙে দিলা!
এরকম অারো অনেক কথা শুনতে হল।
রোগিদের ঘুম ভেঙে গেছে অামার চিৎকারে তাই খুব খারাপ লাগছিল।
ওদের এত অারামের ঘুমটা ভেঙে দিলাম! নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিল।
কিন্তু এতক্ষণ অন্ধকার ছিল এখন হঠাৎ অালো অাসল কোথা থেকে!অার সেই 55নং বেডে কেউ নেই!
অাচ্ছা এটা কি সম্পুর্ণই অামার মনের ভুল?
অামি কাপাকাপা হাতে ফোন নিয়ে ডিসপ্লে টা অন করে দেখলাম গল্পটা অর্ধেক পড়ে যেখানে রাখছিলাম সেখানেই অাছে।
না সব মনের ভুল হতে পারেনা।
এতক্ষণ যা যা দেখলাম সবই সত্যি।
হয়তো এর মাঝে কিছু লুকিয়ে অাছে।কিন্তু কাউকে কিছু বলিনি।
যদি সবাই ভয় পায় তাই।কিছু একটা বলে কাটিয়ে দিলাম।অবশ্য সবাই খুব বকা দিছে।
.
.
সারারাত অার ঘুম অাসেনি চোখে।বারবার এই দৃশ্য গুলোই চোখের সামনে ভাসছিল।
পরদিন সকালেই হসপিটাল থেকে চলে অাসি।
অাসার অাগে একটা জিনিস খেয়াল করলাম 55নং বেড টাতে।উপরে যে সাদা কাপড়(বিছানার চাদর)
সেখানে রক্ত লেগে অাছে।
ঠিক যেখানে লাশটাকে রাতে শুয়ানো হয়েছিল সেখানে।
অাচ্ছা..যদি সব মনের কল্পনা হয়েই থাকে।এই রক্ত অাসল কোথা থেকে? (4টায় যিনি মারা গেছেন। তারপর বেড টা পরিষ্কার করে রাখা হয়েছিল)
অার অামি সারারাত সজাগ ছিলাম।এর মাঝে রক্ত অাসার কথা নয়।
.
অামি যা দেখছিলাম
হয়তো তা ঠিক হয়ত ঠিক নয়
পর থেকে অার কখনো ওই হসপিটালে যায়নি।(সমাপ্ত)