হাওয়াই জাহাজ এ চড়ার সপ্ন আমার সেই ছোট বেলা থেকেই ছিল। ভাবতাম, বাতাসে পাখির মতো ওড়া ; এও আবার সম্ভব নাকি??!!! অবাক হতাম, কিন্তু অবিস্বাস করতাম নাহ।
পানিতে মাছের মতো ভেষে বেড়ানো যদি এততোটাই ডালভাত হয়, তবে বাতাসে তো শ্বাস নেয়া অতোটাও কঠিন কিছু নয়।
জীবনে, রঙিন সপ্ন দেখার আকাঙ্ক্ষা আমার কুনু দিনই ছিলো নাহ। তবে সবুজ আমার খুব প্রিয়,আমি নির্মল সতেজতা ভালোবাসি আর নীল রঙের নীলাম্বরীরর আড়ালে থাকা এক বুনো ময়ূরী কে মনে মনে কাছে পেতে চাই।ভালোবাসার অর্থ বোঝার বয়স আমার তখনো হয় নাই। তবে চঞ্চলা হরিণীর লালসা কার না আছে।
সেই সবুজের পথ পারি দিয়ে আমিও কুনুদিন মেঘের সাথে ভেষে চলবো ভাবিনী কুনু সপ্নেও।
আমি কুনু লেবেসধারী নই, হয়তো সেই জন্যেই আজ লিখতে বসা। ডায়েরী লিখা আমার অভ্যেস ছিলো নাহ, কুনু জন্মেই।
তবে নিয়তি আর পরিনতি মানুষের আওতার বাহিরে।মানুষ যা ভাবে সৃষ্টিকর্তা হয়ত তার অনেক ঊর্ধ্ব চিন্তা করে থাকেন।
আমি "বিবাগী ", নামের অর্থ টা আমার জানা নেই।মা আমায় জানাতে পারেন নাই কুনুদিন।
আমি নিজেও এই নামের কারন অথবা অর্থ খুব বেশি খুঁজি নি।
মায়ের সাথে দেখাই বা দিনে কতোক্ষন হতো।সেই প্রভাতে আমি নিদ্রায় থাকতেই সে অন্নের খোঁজে বের হতো, যখন ফিরতো ততোক্ষণ এ আমি গভীর নিদ্রারত সপ্নের দেশে।
এমনি তো হওয়ার কথা, অন্নের অভাব যেখানে মুখ্য, অন্নদাত্রী সেখানে নিতান্তই উপেক্ষিত।
জীবনে সপ্নের কুনু অভাব আমার কশ্বীনকালেও ছিলো নাহ, তবে তা বাস্তবে রুপ দেয়ার স্বপ্ন আমি এই জন্মেও দেখি নাই।
তবে আমার সপ্নগুলো কে সপ্নের সোপানে তোলার দায়ীত্বটা জিনি একাই নিয়েছিলেন তিনি অই অন্নদাত্রী।
দিনের সবটুকু সময় মজুরি দিয়েও রাত্রিপ্রায় অর্ধেক চর্কায় সুতা কাটতে ব্যাস্ত থাকতেন।
তাকে আমার আজ মনে পড়ছে ভীষণ। তার বদউলতেই আজ আমি হাওয়াই জাহাজে চড়েছি, ইংল্যান্ড যাচ্ছি বড় ডিগ্রী নিতে।
আমার অন্নদাত্রী হয়তো এই মেঘের দেশে থেকেই আমায় ছুঁয়ে চলেছে হাজার বার।
চিরো আড়াল হয়ে, রয়েছে মোর একান্ত সাথী হয়ে। আমার অন্তরের সবটুকু শক্তি হয়ে।আমার জানা নেই, "বিবাগীর" এই ডায়েরীরর পাতা কখনো অন্নদাত্রীর দৃষ্টিগোচর হবে কি নাহ। তবে আমার সফলতারর সব কটি দুয়ার তাহার জন্যই উন্মুক্ত হইয়াছে।
আমার বলতে দিধা নেই যে, প্রিয় সেই নীলাম্বরী আমি হারায়েছি। যা কিছু হারাবার তা নিয়তির খেলা বই কি আরর হতে পারে??!
তবে আমার অন্নদাত্রী আমায় সপ্নপূরনের যন্ত্র হিসাবে রেখে গেছেন।
আজ আমার সপ্ন দেখার দিন শেষ। আমি আজ হাজার মানুষের সপ্নপূরন করি।
হাজারো সপ্নহীন ঘুমন্ত মানুষের মনে সপ্নের জাল বুনে দেই।
আমি বাবুই নই, তবে সপ্নের কারিগর হওয়ার পথে হয়তো আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস ভবিষ্যতে কারো কারো সপ্ন পূরনের হাতিয়ার হবে এই আশায় কাজ করে চলি নিরন্তর।
আর হাজারো হাসির মাঝে দেখি আমার অন্নদাত্রীর মুখ, নীলাম্বরীর কথা আমি আজ ভূলেই গেছি।
আমি সত্যিই ভূলে গেছি।