Things to be grateful about...
আশ্চর্য!
আমার কষ্টে কেউ কাঁদে কিভাবে! তাও আবার রীতিমতো হাউমাউ করে!
আর তা দেখে কিনা আমি বেকুবের মত বসে থাকি। আমি আরেকজনকে অনুরোধ করি যেন ওকে সান্ত্বনা দেয়। কারণ আমি জানিনা কাউকে সান্ত্বনা দিতে হয় কিভাবে।
আমি সত্যিই জানিনা।
আমার অস্বস্তি হয়, গ্যাঁট মেরে বসেই থাকি!
আমার মত প্রত্যুৎপন্নমতি, এমন অবস্থায় সবসময় কেমন বেকায়দায় পড়ে যায় বারবার। কিছু একটা বলার বা করার যে তীব্র প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি বটে! কিন্তু আমার জানা নেই এসব মুহূর্তে কি করতে হয়, কি বলতে হয়।
আমি সেদিন... সেই প্রথম আমার নিজের অসামাজিকতা, জড়তা, প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে জয় পেয়েছিলাম।

যে আমার মন খারাপে আমার জন্য কাঁদছিল, তাকে আমার গতানুগতিক অবহেলায় দূরে রাখতে পারিনি। এক অদ্ভুত প্রশান্তিতে পুরো পৃথিবী ভরে গিয়েছিল সেসময়।
আমার মনে হয়েছিলো আমি ওখানেই, ওভাবেই মরে যেতে চাই।
আশ্চর্য! যে দুঃখ কেবলই আমার একান্ত, আমার সে দুঃখে কেউ এত দুঃখী হয় কিভাবে!
এখনো আমি সেদিনের কথা ভাবলেই হতবিহ্বল হয়ে যাই! কেমন স্বাপ্নিক মনে হয় সবকিছু। ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকি অনেকক্ষণ যেন এই ছবি আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিবে।
আমরা যখন নিজেদের আর একে অপরকে নিয়ে নিয়ে ব্যস্ত, নিজেদের আবেগের মাঝে অন্তর্লীন, আমাদের এই ভয়ংকর সুন্দর মুহূর্তকে ধরে রেখেছে যে মানুষটা...
আমি একবার নাম ধরে ডাকলেই যে তৃপ্ত হয়ে যায়,
আমি তার দেয়া অর্ঘ্য কবুল করলেই যে আত্মহারা হয়,
তাকেও আমি অবহেলা করি প্রচুর।
দৌড়ে পালাতে থাকি। মেঘ দেখলে ঘর পোড়া গরু যেভাবে ভীত- সন্ত্রস্ত হয়, সেভাবে আমি তটস্ত থাকি সদা এই মায়ার জালে না আটকাবার।
তখন ওরা প্রথম বর্ষে, একদম নতুন কুঁড়ি এসে আমাদের কোলে বসার মতো!
সেটা এমন সময় যখন কৈশোরের খোলস ছেড়ে তারুণ্য ছুঁই ছুঁই সকলে। তাদের বয়সটাই এমন ছিল যে, সে সময়টায় তাদের জীবনে খুব দ্রুত অনেক মানুষ আসবে আবার দ্বিগুণ দ্রুততায় চলেও যাবে।

আমার সাথে ওদের বোধহয় সব মিলিয়ে ৪/৫টা ক্লাস হয়েছিলো। তারপরই আমি কলেজ ছেড়ে দিয়েছিলাম।ওরাতো আমার প্রিয় ছিলোই কিন্তু এই অল্প সময়ের মোলাকাতে আমি যে এত গভীরে আঁচড় কাটতে পারবো ওদের হৃদয়ে, মানসে এটা ভাবিনি একেবারেই।
আমি শিক্ষক হিসাবে আমি অতি চমৎকার হলেও, আমার যে মেকি গাম্ভীর্য্যের রাগী খোলস পরে থাকতাম, অই অল্প সময়ে আমাকে অমন ভালোলাগার কোনো সুযোগ আমি দিয়েছি বলে মনে পড়েনা।
কিন্তু আমি যেদিন ক্লাস নিয়ে এসে আমার টেবিলের ফাইলের ভাঁজে হলুদ কাগজে মোড়ানো পাইপাকৃতির কাগজটি যখন খুললাম...

কেউ দেখেনি কে রেখেছে।
কেউ স্বীকার করেনি কে এঁকেছে!
তবে আমার ডিপার্টমেন্টের এবং আশেপাশের সকলের চোখ এড়িয়ে, উপর্যপুরি আমার চোখ রাঙানি খাবার তোয়াক্কা না করে কে এই অসাধ্য সাধন করেছে সেটা আন্দাজ করবার প্রয়াস পেলাম সাথে দেয়া ছোট্ট চিরকুট থেকে। লিখে দিয়েছে- "দুশ্চিন্তা করবেন না ম্যাম! আমাকে এটা রাখতে অন্য কোনো স্যার/ম্যাম দেখেনি। আপনি যে আমাদের বারবার বলেন, আমরা যেন অন্য স্যার/ম্যামদের থেকে বেশী ভালবাসা আপনাকে না দেখাই, এটা আমরা সবসময় মনে রাখি।"
এই কাগজের টুকরার দিকে তাকালে মনে হয়, "আচ্ছা! আমার প্রেমিকটিও এভাবে ভালবাসতে পেরেছিলো কি!"
আমার নিজেকে এতটা অর্ঘ্য প্রাপ্তির যোগ্য কখনো মনে হয়েছিলোনা।
আমার এত আরাধ্য হবার কথা ছিলনা।
আমি এক অনুভূতি প্রকাশ প্রতিবন্ধী জড় পদার্থের ন্যায় হলেও,