এক বৃদ্ধ বাবা তার উচ্চ শিক্ষিত ছেলের সাথে বাসার ছাদে বসে চা খাচ্ছিলেন। এমন সময় হটাৎ করে একটা কবুতর ছাদে উড়ে এসে বসলো। তখন বৃদ্ধ বাবা তার ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলেন এটা কি ? তখন উনার ছেলে উত্তরে বললো এটা কবুতর। কিছুক্ষন পর বৃদ্ধ বাবা আবার জিজ্ঞাসা করলো এটা কি ? তখন ছেলে বললো বাবা আমি তোমাকে মাত্র বললাম এটা একটা কবুতর। এর কিছুক্ষন পর তৃতীয় বারের মতো আবারো জিজ্ঞাসা করলেন বাবা এটা কি ? এই বার ছেলেটি খুব রাগান্বিত হয়ে বাবাকে ধমক দিয়ে বলতে লাগলো, কেন তুমি একই প্রশ্ন আমাকে বার বার করে আমাকে বিরক্ত করছো ? আমি তোমাকে অনেকবার বলেছি এটা একটা কবুতর। তুমি কি আমার কথা বুঝতে পারছো না?
এবার বৃদ্ধ বাবা একটু মন খারাপ করে চুপ করে এখান থেকে উঠে চলে গেলেন। এবং কিছুক্ষন পর একটি অনেক পুরানো উপরে ধুলাবালু পড়া ডাইরি হাতে নিয়ে মুছতে মুছতে ছেলের কাছে আসলেন। এই ডাইরিতে তিনি তার ছেলের জন্মের পর থেকে ছেলের নানান মজার ঘটনা লেখে রাখতেন। বৃদ্ধ বাবা তখন ডাইরির একটা পৃষ্টা খুলে ছেলের হাতে ডাইরিটি দিয়ে পড়তে বললেন। সেই উচ্চ শিক্ষিত ছেলে এখন তার বাবার হাতে লেখা ডাইরিটি পড়তে লাগলেন। ডাইরির একটা অংশে লেখা ছিল আজকে আমার ছোট্ট সোনামণি আমার সাথে ছোফায় বসে ছিল। এমন সময় একটা কবুতর এসে আমাদের ঘরের জানালায় বসলো। তখন আমার ছেলে আমাকে ১৮ বার জিজ্ঞাসা করেছিল বাবা এটা কি ? তখন আমি তার প্রশ্নের সাথে সাথে ১৮ বার এই বলেছিলাম এটা কবুতর।
আমি তাকে ১৮ বারের প্রতিবারই কোলে নিয়ে আদর করেছি আর তার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। তখন আমি তার এই আচরণে মোটেও বিরক্ত হয়নি। বরং আমি আমার নিষ্পাপ ছেলের প্রতি মমতা অনুভব করেছি।
লেখাটি পরে বৃদ্ধ লোকটির শিক্ষিত ছেলে লজ্জিত হলো। সে বৃদ্ধ বাবার কাছে ক্ষমা চাইলো। এবং বাবাকে কথা দিলো এর পর থেকে সে আর কোনোদিন তার বাবার সাথে দুর্ব্যবহার করবেনা। ছেলে ছোট থাকা অবস্থায় ১৮ বার একই কথা জিজ্ঞাসা করার পরেও বাবা বিরক্ত হয়নি। অথচ সেই বাবা বৃদ্ধ অবস্থায় তার নিজের সেই ছেলেকে মাত্র তিন বার একই প্রশ্ন করেছে বলে ছেলে তাতে চরম বিরক্ত প্রকাশ করেছে। এবং বাবার সাথে রাগারাগি করেছে।
যদি আপনার বাবা মাকে আপনি বৃদ্ধ অবস্থায় পেয়ে থাকেন তাহলে তাদেরকে দূরে সরিয়ে দিবেন না। অথবা তাদেরকে বোঝাও মনে করবেন না। তাদের সাথে কখনো উচ্চস্বরে কথা বলবেন না। তাদের সাথে ভদ্র ভাষায় ঠান্ডা মাথায় বিনয়ের সাথে কথা বলুন। এবং বাবা মায়ের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে উঠুন। এবং আজ থেকে প্রতিজ্ঞা করুন বাবা মাকে যতটা সম্ভব যত্নে রাখবেন। কারণ তারা আপনার জন্মের পর থেকে আপনার প্রতি যত্নশীল ছিল। তারা শত বাধা পেরিও আপনার সব চাহিদা পূরণ করেছেন।
তাই সবসমই আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি আমরা যেন সবসময় বাবা মায়ের সেবা করতে পারি এবং সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পারি। কারণ আমরা সবাই এই কথা টা জানি বাবা মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত।