নতুন জায়গায় এসেছি সবকিছু মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগছে, তবে কোন অসুবিধা হচ্ছে না।চাকুরীজীবীদের মনে হয় ভাগ্যে এমনটাই হয়, তাদের কোন নির্দিষ্ট কোন জায়গা থাকেনা। আজ এখানে তো কাল ওখানে।
এ নিয়ে কতগুলো জায়গা অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের ভ্রমণ হয়ে গেল। এবার যে জায়গাটায় এসেছি, সে জায়গাটা একটা মফস্বল শহর খুব ছিমছাম ও নিরিবিলি। যেহেতু পরিবারে মাত্র দুইজন আমরা সদস্য, তাই যে জায়গাতেই যাই আমাদের ছোট সংসার গুছিয়ে উঠতে খুব একটা সময় লাগে না।
নতুন জায়গায় আসার পর থেকে খুব একটা বেশি বাইরে বের হওয়া হয়নি, এমনিতেই সরকারি কোয়ার্টার তার মধ্যে আশেপাশে যে কোয়ার্টারগুলো আছে তাদের সবাই আমার মতনই বাহির থেকে আসা মানুষজন। আজ বিকেলে কেন জানি মনে হল যে বাসার বাহিরে একটু বের হই, বাসার বাইরে বের হতেই দেখি একদল আমার স্বজাতি মানুষ, তারা সবাই আমাকে বললো কি ভাবি নতুন এসেছেন পরিচয় পর্বটা তো একটু হোক আমাদের সঙ্গে।
যদিও তাদের দেখে আমার ভালো লেগেছে কারণ একা একা বাসায় থেকে আমিও এই কয়দিনে হাঁপিয়ে উঠেছি। তাই আজ বাহিরে এসে সবার সঙ্গে পরিচয় হয়ে আমারও ভাল লাগলো। তারা আমার আশেপাশেই থাকে, তাই তাদের সঙ্গে কথা বলে নিজেকে একটু হালকা বোধ করলাম।
যদিও প্রত্যেকটা ভাবির একটা করে ছোট ছোট বাচ্চা আছে, তবে আমি এমন একজনকে খুঁজছিলাম যে আমার মত হবে। আমি যাকে খুঁজছিলাম তাকে যখন পেয়ে গেলাম, তাকে বললাম যে ঠিক আছে আমরা তাহলে পরিচিত হতে পারি এবং অবশ্যই আমাদের রেগুলার দেখা হবে এবং আমাদের কথা হবে সেও আমাকে আশানুরূপ ভাবে বললো।
আমি জানি যে এই সম্পর্ক গুলো খুব একটা বেশি দিনের না, কারণ এখানে যতদিন আছে ঠিক ততদিনই মানুষগুলোর সঙ্গে আমার পরিচয় থাকবে, তাই বেশি গায়ে পড়ে আর তেমন কারো সঙ্গে পরিচয় হলাম না। আমার মত যে আছে, তার সঙ্গে রোজ কথা হতো গল্প হতো এভাবে কেটে গেল দুইটা বছর। অবশেষে এখান থেকে আমাদেরকে চলে যেতে হবে এবং দুই বছরের মধ্যে তার সঙ্গে আমার অনেক ধরনের স্মৃতি থেকে গেল কিন্তু সেই সময়ে আমাদের কোন মোবাইল ছিল না, যাইহোক আজকে অনেকদিন পরে যখন হঠাৎ আমি ফেসবুকে ঢুকেছি তখন দেখি নিউজফিডে তার ছবিটা আমার চোখে পরলো।
সত্যি বলতে কি, কিছু কিছু আনন্দ মুখ ফুটে প্রকাশ করা যায়না। হুট করে ফেলে আসা মানুষকে দেখে ভালোই লাগলো। ভালো থাকুক ফেলে আসা মানুষগুলো, ভালো জায়গায়।
