অনেকদিন হলো ঘুরাঘুরি করিনা, এইতো কয়েকমাস আগেও প্রতি সপ্তাহে অন্ততপক্ষে দুইদিন ঘুরাঘুরি করার পরিকল্পনা থাকতো। কিন্তু এখন সময় খুবই খারাপ, ঘুরতে চান? পারবেন তবে সেটা আপনার এলাকার আশেপাশেই হতে হবে, এমন না যে আপনাকে প্রশাসন কিংবা এলাকার বড় ভাই এমন কেউ বাধা দিবে, আপনার নিজেরই ইচ্ছা হবে না কোথাও থেকে ঘুরে আসি, কিন্তু বাসায় বসে বসে আর কত? বিরক্ত লাগে না? তাই আপনার এক মন ঠিকই চাইবে কোথাও থেকে ঘুরে আসি, আরেক মন বলবে "থাক এমমিতে বাহিরের যা পরিস্থিতি এমনাবস্থায় ঘুরাঘুরি করা ঠিক হবে না" কে জানি বলছিলো মানুশের মন দুইটা এক মনে হ্যাঁ বললে আরেক মন বলে না? সে কথার সত্যতা এখন একদম পরিষ্কার।
তবে কি আমরা ভয় পাচ্ছি? পাচ্ছিনা তো, এইযে আমাকে দেখেন কত সাহস আমার, এত এত ইফেক্টেড, কত মৃত্যের খবর তবুও দল বেধে এখানে সেখানে চলে যাই ঘুরতে! কেনো যাই? সেটা নিজেও জানি না। অসতর্কতার অভাব? নাতো মাস্ক, হেন্ড সেনিটাইজার, লক ডাউনে ঘরে বন্দি থাকাসহ যা যা করা দরকার সবই তো করলাম কিন্তু ঘাটতি কোথায়? ওই যে কইলাম নিজেও জানি না।
যাই হোক, কাজের কথায় চলে আসি। আজকে যেখানে ঘুরতে আসলাম সেটি হচ্ছে আমাদের মিনি কক্সবাজার, মিনি কক্স বাজার নাম করণ কিভাবে হয়েছে সে ইতিহাস আমার কাছে নাই তবে জায়গাটা সুন্দর এতটুকু আমি খোলাসা করে বলতে পারি। জায়গাটা সুন্দর হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে দুইদিকে পানি আর মাঝখানে এক উপজেলা হতে অন্য উপজেলায় যাওয়ার রাস্তা, সাগরের প্রতি মানুষের আকর্ষণ ব্যাখ্যা করার মত নয়, কিন্তু বিল এবং বিলের পানি দেখার প্রতিও যে মানুষের আগ্রহ রয়েছে সেটা মিনি কক্স বাজার গেলে বুঝা যায়।
এটি হচ্ছে মিনি কক্স বাজারের সেই ঐতাহাসিক ব্রিজ যেখানে ঈদ মৌসুম ছাড়াও হাজার লোকের ভিড় জমে শুধুমাত্র বিল আর সেই পরন্ত বিকেলের শেষ দেখার জন্য।
সূর্য ঢুবার আগ মূহুর্ত, সবাই যখন নিজেদের ছবি তুলায় ব্যস্ত তখন আমি ব্যস্ত প্রকৃতি নিয়ে, তার অবশ্য কারণ একটাই সেটা হচ্ছে "আজকে মরলে কালকে দুইদিন" তাই সবসময় প্রকৃতির সুন্দর্য উপভোগ করার চেষ্টা করি।
তবে এসবের মধ্যে একটা ভালো ছবি তুলেছি সেটি হচ্ছে চাঁদসহ ঘুঁড়ির ছবি, দিন যাচ্ছে মানুষ বাড়তেছে সাথে মানুষের পছন্দও, আগে যখন আমরা এখানে আসতাম তখন এসব দেখা যেত না, কিন্তু এখন প্রতিনিয়তই ঘুঁড়ি দেখতে পাই! তবে চাঁদ এবং ঘুঁড়ি দুইটা এক ফ্রেমে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার ছিলো।
বাংলার আসল হিরুদের সুখ কোথায়? তাদের সুখ, দুঃখ্য সবকিছুই তাদের ফ্যামিলিকে ঘিরে, এই ছবিটি তুলার সময় প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিলো তাই একটু ঝাপসা এসেছে কিন্তু তাতে কি? আমি তো মাঝির ছেলের শুয়ে থাকা দেখেই তার আনন্দ বুঝে গেছি কেননা আমি নিজেও তো এক সময় সেই জায়গায় ছিলাম।
রাস্তা এবং পাশের সবুজ গাছপালাসহ আরো কয়েকটি ছবি তুলা উচির ছিলো, কিন্তু সময়ের অভাবে আর তুলা হয়নি। তবে বাজার থেকে ব্রিজ পর্যন্ত যাওয়ার একটি ফুল ভিডিও ক্লিক করেছি, একদম শুরু থেকে শেষ অব্ধি। সময় করে একদিন সে ভিডিওটি ইউটিউবে আপলোড করার চেষ্টা করবো।
কিভাবে যাবেন? জায়গার নাম কি? কোথায় এবং কিভাবে? যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর।
জায়গার নাম : ধর্মতীর্থ, মিনি কক্স বাজার, সরাইল টু নাসিরনগর রাস্তা।
স্থান : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায় অবস্থিত।
কিভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে বিশ্বরোড তারপর বিশ্বরোড থেকে কালীকচ্ছ বাজার, ১৫ টাকা নিবে সি এন জি দিয়ে, তারপর দশ টাকা দিয়ে মিনি কক্স বাকার ব্রিজ।
সিলেট থেকে বিশ্বরোড তারপর বিশ্বরোড থেকে সেই একই টাকায় মিনি কক্স বাজার ব্রিজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে আসলে, সরাসরি কালীকচ্ছের সি, এন, জি তে উঠবেন কোমারশীল, অথবা মেড্ডা থেকে আসলে ৪০-৫০ টাকা নিবে তারপর কালীকচ্ছ হচ্ছে ১০ টাকায় মিনি কক্স বাজার।
তবে যাওয়ার আগে অবশ্যই বিকেলে আসার চেষ্টা করবেন, এবং হালকা পাতলা কিছু খেতে চাইলে সাথে নিয়ে আসবেন, কেননা ওখানে খাওয়া দাওয়া এবং থাকার ব্যবস্থা নাই, যদিওবা টুকটাক খাবার পাওয়া যায় তবে সেগুলো মানের তুলনায় আকাশচুম্মি দাম।
ছবির কারীগর
সবগুলো ছবি আমি নিজেই তুলেছি, তবে আমার নিজের ছবিটা আমার ভাতিজা তুলেছে, কিছু ছবি ফোনে আর কিছু ছবি ক্যামেরায়। Camera : Nikon 7200D
phone : Redmi note 8 pro
ধন্যবাদ সবাইকে।