মাইনুল তার স্কুলের হেড স্যারের কাছ থেকে টাকা ম্যানেজ করে বড় বোনের বিয়ের কাজ সম্পাদন করে, কোন রকম জুট ঝামেলা ছাড়া। সব কিছু সুন্দর মতো মিটমাট হয়ে যাওয়াতে মাইনুলের মা ও অনেক খুশি, যেনো বুক থেকে রাজ্যের পাহাড় নেমে গেছে।
দেখতে দেখতে মাইনুলের পিএসসি পরিক্ষা চলে আসে। মাইনুল পড়ালেখায় এখন একটু বেশি সময় দে। যে করে হোক তাকে পিএসসি পরিক্ষায় ভালো করতে হবে। সে জানে ভালে রেজাল্টটা যতোটা তার নিজের জন্য ততোটা তার মায়ের মুখে হাসি ফোঁটানোর জন্য দরকার।
এদিকে মাইনুলের দুলাভাই মাইনুলদের বাড়িতে প্রথম আসবে সবাই ব্যস্ত, মাইনুল চিন্তায় পড়ে গেলো দুলাভাইকে সকালে কী নাস্তা খেতে দিবে, রঙ চা আর চাল ভাজা দিয়ে তো আর নতুন জামাই কে আপ্যায়ন করা যায়না। মাইনুলের মাও একটু চিন্তায় পড়ে গেলো। মান সম্মানের বিষয়, একে তো মেয়ের জামাই, তার উপর বিয়ের পর প্রথম বার শ্বশুর বাড়িতে আসছে।
প্রথম দিন সকালে সবজি আর দেশি মুরগির ঝোল দিয়ে সারিয়ে দিছে। নাস্তার শেষে রঙ চা কিভাবে দিবে সে চিন্তায় অস্থির মাইনুলের মা। চা বানিয়ে বসে আছে মাইনুলের মা, শরমে চা নিয়ে কেউ যাচ্ছেনা নতুন জামাই এর কাছে, শেষে দায়িত্ব পড়ে মাইনুলের উপর। মাইনুল রঙ চা নিয়ে তার দুলাভাইকে বলে, বাবা অসুস্থ হওয়ার পর ডাক্তার বলছে দুধ চা না খেতে তাই আমরা এখন ঐদিন থেকে রঙ চা খেয়ে আসছি।
নতুন জামাই মাইনুলের কথায় সম্মতি দিয়ে বলে ডাক্তার ঠিকই বলছে, রঙ চা শরীরের জন্য অনেক ভালো। মাইনুল কথার সুর ধরে বলে, দুলাভাই আমি বড় হয়ে ডাক্তার হতে চাই। দুলাভাই ও মাইনুলের কথায় সায় দিয়ে বলে তাহলে কিন্তু এখন থেকে ভালো করে পড়তে হবে। দুলাভাই আপনি পড়ালেখা নিয়ে চিন্তা করবেননা, শুধু দোয়া করবেন, মাইনুল উত্তর দে। দোয়া তো অবশ্যই করবো শালা বাবু, মাইনুলের দুলাভাই জবাব দে।
মাইনুলের পিএসসি পরিক্ষা শেষ হয়, পরিক্ষা ভালোই হয় মাইনুলের। এদিকে মাইনুলের হেড স্যা জরুরী খবর দে মাইনুল কে। মাইনুল গিয়ে দেখে তার প্রিয় স্যার অনেক অসুস্থ, তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা দিতে হবে, টাকার দরকার। যদি পারে কিছু টাকা দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন মাইনুলের হেড স্যার।
মাইনুল বলে স্যার চিন্তা করবেননা, আমি যা পারি ব্যবস্থা করপ দিবো, চোখ ভিজে উঠে অভিমানের উষ্ণতায়, একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে থাকে অনেক্ক্ষণ।
চলবে......
Source: Pixabay