আসসালামু আলাইকুম ,
আজকে আপনাদের শুনাবো একটি ভ্রমনের গল্প। আজকে আমরা জানবো সিলেট ঘুরতে যাওয়ার গল্প। আমরা আসলে ভার্সিটিতে পড়াশোনা করে ঘুরতে যাওয়ার জন্য় তেমন একটা সময় পাই না। তবুও আমরা সেমিস্টার ফাইনাল শেষ করে কোথাও না কোথাও ঘুরতে বেরিয়ে পরি। এবার আমরা সবাই মিলে ঘুরতে যাওয়ার চিন্তা করতেছিলাম। সবাই যেতে রাজি না, অনেকেই না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আমরা কিছু বন্ধু ঘুরতে যাওয়া নিয়ে অনেক বেশি আগ্রহী। তাই যারা যেতে নারাজ ছিলো তাদের কে সবাই মিলে মেসেঞ্জার গ্রুপে কল করে বুঝিয়ে রাজি করেছি। তার পর আমরা সবাই মিলে ঠিক করলাম সিলেট ঘুরতে যাবো। আমাদের পরীক্ষা শেষ করেই বেড়িয়ে পরি। অনেকেই বাড়িতে ছিলো তাই যার যার মতো আমরা ঢাকা এসে একসাথে হই। আমাদের প্লেন ছিলো আমরা প্রথম দিন গিয়ে কিশোরগঞ্জ এক বন্ধুর বাড়ি থাকবো সবাই। পরে সেখান থেকে সিলেটের দিকে রওনা হবো। তাই সবাই মিলে চলে গেলাম কিশোরগঞ্জ ।
কিশোরগঞ্জ সেই বন্ধুর বাসায় একদিন থেকে, পরের দিন সেখানে ঘুরাঘুরি করি। রাতের বেলায় কিশোরগঞ্জের বন্ধু শাকিল সিলেটের জন্যে বাসের টিকেট কেটে রাখে। পরে আমরা রাতের বেলায় সবাই বাস কাউন্টার যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরি। তখন ছিলো হালকা বৃষ্টি। বৃষ্টির মধ্যেই আমাদের যেতে হয় বাস কাউন্টারে। রাত যখন ১১ টা বাজে এমন সময় আমাদের বাস চলে আসে।
বাসে উঠে কেউ ফোন ইউজ করছে, কেউ গল্পঃ করছে । কিন্ত আমি গাড়িতে উঠেই কিছুক্ষন পরেই ঘুমিয়ে পরি।বাস জার্নিতে ঘুম না দিলে আমার একটু খারাপ লাগে যার জন্য আমি চেষ্টা করি খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যেতে। ভোর ৫ টার দিকে আমরা সিলেট গিয়ে পৌঁছি। তখন ফজর আযান দিচ্ছিল।গাড়ি থেকে নেমে আমরা সবাই নামাজ পরে নেই একটা মসজিদে। নামাজ পরে সবাই সবার ব্যাগ নিয়ে রওনা হই রুম খুঁজতে। অনেকক্ষন খোঁজাখুঁজির পর আমরা মনের মত ২টা রুম খুঁজে পাই।
এর মাঝে আমরা যে লেগুনা গাড়ি দিয়ে হোটেল যাই সেই গাড়িটাই আমরা ঠিক করে নেই। যে কয়দিন থাকবো সেই গাড়ি দিয়েই আমরা গুরবো। পরে আমরা সবাই রুমে ফ্রেশ হয়ে হালকা খাওয়া দাওয়া করে গাড়ির ডাইভার কে কল দেয়া হয়। আমরা সবাই বড়িয়ে পরি, কিছুখন পর গাড়ি এসে পরে আমাদের হোটেলের নিচে। আমরা রওনা হয়ে যাই ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর নামাক একটি স্থানের উদ্যেশ্যে। প্রায় ২ ঘন্টা পর আমরা ভোলাগঞ্জ গিয়ে পৌছে গেলাম। ভোলাগঞ্জ যায়গাটা ভারত এর সীমান্তের সাথে অবস্থিত।
আমরা ভোলাগঞ্জ গাড়ি থেকে নেমে সবাই এক সাথে সাদাপাথর এর উদ্যেশ্যে রওনা হই।ভোলাগঞ্জ থেকে আমাদের নৌকা দিয়ে সাদাপাথর যেতে প্রায় আধাঘন্টা সময় লাগে। নৌকায় যাওয়ার সময় ভোলাগঞ্জ এর সুন্দর্য টা এতো সুন্দর লাগছিলো যা এক কথায় অসাধারণ। চারিদিকে পানি আর সবুজ বনাঞ্চলের পাহাড়। নীল আকাশ এর নিচ দিয়ে পাহাড় ঘেঁষে ভেসে যাচ্ছে মেঘমালা। ঝর্না থেকে পাথর রাজ্যে ভেসে আসছে শীতল পানি। এই দৃশ্য যে কারো মন কেড়ে নিবে।
শীতল স্বচ্ছ পানি দেখে আমরা সবাই লকারে ব্যাগ ও মোবাইল রেখে একটা করে টিউব নিয়ে পানিতে নেমে পরি। পানিটা প্রবাহমান ছিলো যার জন্যে আমরা সবাই টিউব দিয়ে এক পাশ থেকে অন্য পাশে চলে যাই।এইভাবে আমরা প্রায় ২ ঘন্টা গোসল করে উঠে পড়ি। কেনো জানি জায়গাটার প্রতি একটা মায়া চলে আসছিল জায়গাটা ছেড়ে আস্তে ইচ্ছে করছিলো না। অবশেষে আমাদের ভোলাগঞ্জ থেকে ফেরার সময় হয়ে আসলো। আমরা আবার ফেরার জন্যে রওনা হই সেখান থেকে।সেইসাথে শেষ হয় আমাদের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এর ভ্রমণ কাহিনী।