শখ একটি মানুষকে পরিপূর্ণ করে। যার মধ্যে কোনো সখ নেই সে একজন প্রকৃত মানুষ হতে পারে না। সকলেরই শখ হয়েছে কিন্তু একেক জনের একেক। অনেকে জানেই না নিজের শখ টা কি। অনেককে তার শখ জিজ্ঞেস করলে সে বলে দেয়,আমার শখ বাগান করা।কিন্তু এটা আসলে মুখস্থবিদ্যার কারণে আমরা বলে থাকি।
শখ বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন আমার শখ শখ ছিল সংগ্রহ করা। ছোটবেলা থেকেই আমি বিভিন্ন জিনিস পাতি সংগ্রহ করতে ভালোবাসি। অনেকে এটাকে বাচ্চামি বলে থাকে।কিন্তু জানিনা কেন জানি আমার এটা খুবই পছন্দের একটি কাজ।এমনকি আমি সেগুলো কে খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়েও রাখে। বাচ্চাদের দেখাই কিন্তু কাউকে দেইনা। কারণ এগুলো আমি সংগ্রহ করেছে একটু কষ্টকর ভাবে, তাই এগুলোর মূল্য আমি বুঝি। কিন্তু অন্যরা এটার মূল্য বোঝে না তাই আমি তাদেরকে এগুলো দেই না। আমি ঈদের ছুটি কাটাতে গ্রামে এসেছি।এখানে এসে আমার অতীতের কিছু সংগ্রহ চোখে পড়ে গেলো। ভাবলাম এসব আপনাদের সাথে শেয়ার করি ,কিভাবে সংগ্রহ করেছিলাম প্রভৃতি।
ফ্লাই-জু/Fly-Zu
সবার প্রথমে আসা যাক ফ্লাই-জু। এগুলো আমার সময়ের অর্থাৎ ২০১০-২০১১ সালের দিকে পটেটো চিপস এর মধ্যে দেয়া হতো। তখন ছিল মেরিডিয়ান (Meridian) চিপস।তখন প্রায় সব রকমের চিত্রের সাথে বিভিন্ন খেলনা দেয়া হতো। তবে মেরিডিয়ান চিপস অনেকদিন খেলনা দিয়েছিল।এই চিপস গুলোর মূল্য ছিল দশ টাকা করে, যা বর্তমানে একই দামে রয়েছে।
এগুলো রাবার দিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় মারার কাজে ব্যবহার করা হতো। তবে আমি সবগুলো চিপস খেয়ে পাইনি কয়েকটি কিনেছিলাম আর সংগ্রহ করেছিলাম।
WWF cards
আমার আরেকটি সংগ্রহ হলো এই ডাবলু ডাবলু এফ এর কার্ডগুলো। এগুলো মূলত মনের ইচ্ছা থেকেই সংগ্রহ করেছিলাম। এগুলোর আলাদা একটি পজিশন দিয়েছিলাম। আমার ছোটবেলা থেকেই পছন্দের রেসলার হলো রক।
রিচার্জ কার্ড
এটা বর্তমানে দুর্লভ বস্তু বলা চলে। কারণ বর্তমানে আর কেউ কার্ডের মাধ্যমে রিচার্জ করে না ,কিন্তু পূর্বে এ কার্ডের মাধ্যমে মানুষ রিচার্জ করতো।যদিও যখন এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম ,তখন ভেবেছিলাম যে ভবিষ্যতে এই কার্ডগুলোর নাম্বার গুলো ব্যবহার করে মনে হয় আবার রিচার্জ নিতে পারব। কিন্তু আমার ধারনাটি ভুল ছিল।
Cricketers card
এগুলোও আমি চিপস এর মধ্যে পেয়েছিলাম। তখনকার নামকরা মেরিডিয়ান চিপস। এখানে প্রায় ১২০ টির মতো কার্ড রয়েছে। এখানে বাংলাদেশ বাদে সকল দেশের ক্রিকেট খেলোয়াড়দের ছবি আছে। চিপস এর মাধ্যমেই কার্ড পাওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল এর মধ্যে একটা আলাদা উপহার ছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমি সেটা কখনই পাইনি।তবে আমি সেই কার্ডগুলো আজও খুব যত্ন সহকারে রেখে দিয়েছি। এর মধ্যে একটি বিশেষত্ব হলো এই ১২০ টির মধ্যে প্রায় ১০০ টি একেবারে অনন্যা মানে অন্যটির সাথে মেলেনা। এখানে প্রায় সকল কিংবদন্তির ক্রিকেট খেলোয়াড়ের ছবি রয়েছে।
এগুলোও আমি সবগুলো চিপসে খেয়ে পাইনি, সংগ্রহ করেছিলাম বন্ধু-বান্ধবের থেকে।
সিমের কার্ড
এগুলো বর্তমানেও কিছুটা চলমান তবে কার্ডগুলো বর্তমানে ছোট হয়ে এসেছে। আমি ছোটবেলা থেকেই এগুলোও সংগ্রহ করতাম। এগুলো কিন্তু বর্তমানে খুব দুর্লভ বস্তু। এখানে প্রায় সকল সিমের ই বড় কার্ডটি রয়েছে। হতে পারে এগুলোর মূল্য নেই তবে আমার কাছে এগুলো অনেক মূল্যবান। আমি যখনই বাড়িতে আসি তখন ঐ এগুলো খুলে চেক দেই সব ঠিক আছে কিনা। আমার ভাতিজা, ভাগ্নেরা এগুলো নিয়ে যায়। হয়তো বা আরো অনেক ছিল তবে সেগুলো নিয়ে গিয়েছে ,বর্তমানে এগুলো রক্ষা করতে পেরেছি।
যখনই আমি এসব সংগ্রহ দেখি আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায়। হয়তোবা আমি ছোটবেলায় খেলাধুলা একটু কম করতাম, কিন্তু আমার এসব জিনিস সংগ্রহের প্রতি ছোটবেলা থেকেই অনেক আকর্ষণ ছিল। বর্তমানে অনেক কিছু আমি সংগ্রহ করছি। কিছুদিন পূর্বে কলম এবং পেড সংগ্রহ করতাম,কিন্তু বুঝলাম এটার কোন ভিত্তি নেই
তাই আমি সেসব ব্যবহার করে ফেলেছি, তবে হয়তো সেগুলো সংগ্রহ করলে ভালোই হতো। কারণ ভবিষ্যতে এসব মানুষ দেখতে পারবেনা। আমার ধারণা আপনাদের সবারই কিছু না কিছু সংগ্রহ রয়েছে। অনেকে ডাকটিকিট সংগ্রহ করে ,অনেকে কয়েন সংগ্রহ করে, আবার অনেকে অজানা কিছু জিনিসপাতি। সবদিক মিলিয়ে মানুষের জীবনের শখ থাকা খুবই দরকার। যার জীবনে শখ নেই,যার জীবনের লক্ষ্য নেই ,যার জীবনের কোনো আশা নেই, তার বেঁচে থেকে কোন লাভ নেই। শখ একটি মানুষকে পরিপূর্ণ করে। "আলহামদুলিল্লাহ"আমার ছোট বেলায় কিছু শখ ছিলো ,যার ফলে আমি কিছু সংগ্রহ করেছিলাম। আজও ব্যস্ত সময়ের পরে যখন সেসব দেখি অতীতের কথা মনে পড়ে যায়।