
বিকালবেলা একলা আমি আনমনে গান শুনতে শুনতে বারান্দায় বসে চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে চোখ পড়ে নিচের তলায়। একটি বাড়ির দিকে দেখলাম চিল্লাচিল্লি করছে পুরুষকন্ঠ আবার মাঝে মাঝে মহিলার গলার শব্দ আসছে - ও মা-বাবা আমাকে বাঁচাও!
আমি আসলে প্রথমে বুঝতে পারিনি বিষয়টা কী। পরে জানতে পারলাম স্বামী তার স্ত্রীর উপর নির্যাতন করছে।
তার স্বামী নাকি আবার একটা বিয়ে করছে। তাই বউকে বলছে তুই চলে যা আমার বাড়ি থেকে। আমি তোকে রাখবো না। তুই দেখতে সুন্দর না আরো অনেক কিছু!
সেটা আসলে বলে বোঝানো সম্ভব না যে মানুষের মুখের বুলি এত খারাপ হতে পারে। আমরা সবাই একটা কথা কিন্তু জানি সৃষ্টিকর্তার বানানো প্রতিটি জিনিস সুন্দর আর সৃষ্টির সেরা জীব আমরা।
সেখানে আপনি আমি সৃষ্টির সেরা জীব হয়ে কিভাবে মানুষের চেহারার নির্বাচন করতে পারি? কিভাবে বলতে পারেন আপনি একটি মানুষ হয়ে তুই সুন্দর না?
আরে বোকার রাজ্যে বাস করছ এখনো! ভেবে দেখো যার মন সুন্দর সেই প্রকৃত পক্ষে সুন্দর। সৃষ্টিকর্তা সবাইকে তার নিজ হাতে তৈরি করেছেন সুন্দর করে। তোমরা তোমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক করো তাহলে দেখবে তোমার চলার পথে কেউ বাধা হবে না। সবাই সাহায্য করবে তোমাকে।
সবকিছুর যেমন শুরু আছে তেমনি শেষ আছে। ভালো আছে মন্দ আছে। ভালোটাকে ভালোবাসবে খারাপটাকে বাসবে না- তা কী করে হয়? দুটোকেই ভালোবাসতে হবে। তা না হলে আমি কেমন মানুষ হলাম?
কিন্তু কী করছি আমরা? ভালোটাকেই ভালোবাসতে চাই। ওই যে প্রবাদ বাক্যে আছে- তেল মাথায় সবাই তেল দেয়।
ভেবে দেখেছেন তেলো মাথায় তেল না দিয়ে যদি যার মাথায় তেল নাই তাকে একটুখানি হাত বুলিয়ে দেই তার মাথায়; তাহলে কিন্তু এই যে আমাদের আশেপাশে দেখা যায় অভাবে অনটনে মানুষ খাইতে না পেরে চুরি-ডাকাতি করছে এগুলা কমে যায়।
তো আমি জানি প্রত্যেকের ব্যক্তিত্ব ভিন্ন, হতাশা ব্যর্থতা ইত্যাদি প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যে আছে বলেই কিন্তু আমরা মানুষ। তবে হ্যাঁ খারাপ সময়টা কিন্তু বেশি থাকে যেটা অতিক্রম সবাই করতে পারে না। আর না পারাটাই কিন্তু ব্যর্থতা।
একটা মানুষ সব থেকে কষ্ট পায় ব্যর্থ হয়ে এবং সে হতাশ হয়ে পড়ে। সে তখন প্রত্যাশা করে পরিবারের কাছে এখানে একটা কথা না বললেই না।
আমি দেখেছি একটা মেয়েকে, তার কাছ থেকে হয়তো তার কষ্টটা বুঝি নি তেমন, কিন্তু তার বুকফাটা কান্না দেখেছি। ওই মেয়েটা তার স্বামীর ঘরে ছিল। কিন্তু কোন একটা কারণে সে বিবাহিত জীবনে সুখী ছিলো না।
সে তখন সিদ্ধান্ত নেয় সে ডিভোর্স দিবে এবং সে যখন ডিভোর্স দিয়ে বাবার বাড়ি থাকতে শুরু করল তখন তার বাবার বাড়ি তার কাছে জাহান্নাম মনে হতে শুরু হল।

তারপরও জীবন থেমে নেই। আমরা মানুষ কিন্তু আমরা মানুষের কষ্ট বুঝতে পেরেও কিছু করতে পারি না। বরং ওই জিনিসটা নিয়ে মাতামাতি করি। তবে মনে রাখা উচিত আজকে তোমার কালকে আমার।
আপনারা কেউ কিছু মনে করবেন না দয়া করে আমি বেশ কষ্ট নিয়ে কথাগুলো লিখেছি কারণ আশেপাশে মানুষগুলোকে দেখে কিছু করতে পারি না তাদের জন্য দুর থেকে ভালবাসতে পারি।