সময়টা ছিল গত বছরের কুরবানি ঈদের পরপর। ইউনিভার্সিটির ক্লোজ বন্ধু শাহেদের বিয়ে। । বন্ধুর বিয়ের অনুষ্ঠান মীরসরাই তে। ঢাকা থেকে তিন বন্ধু হাসিব, রন আর নাভিদ ও আসতেছে।আমি চাকুরিসূত্রে চট্টগ্রাম থাকলেও কখনও গুলিয়াখালী সিবিচ এ যাওয়ার সময় করে উঠেতে পারিনি, ভাবলাম এই সুযোগকে কাজে লাগানো যাক।
দুপুর ২ টায় বিয়ে বাড়ির আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে চার বন্ধু বেড়িয়ে পড়লাম। আমাদের বন্ধু শাহেদ স্থানীয় হলেও যাওয়ার পথ ঠিকভাবে বলতে পারল না। আমরাও নতুন বরকে খুব একটা পেইন দিতে চাইলাম না। গুগল ম্যাপ থাকতে টেনশন এর কি আছে!!
মীরসরাই থেকে ২ঃ০০ টার দিকে রওয়ানা হয়ে সীতাকুণ্ড বাজারে পৌছলাম ২ঃ৩০ এর দিকে। বাস ভাড়া জন প্রতি ৩০ টাকা। এরপর সেখান থেকে ৫ কিঃমিঃ এর মত দূরত্ব। দামাদামি করে সিএনজি পাওয়া গেল ২০০ টাকা ভাড়া। ৫ কিঃমিঃ এর জন্য ২০০ টাকা বেশি হলেও কিছু করার নাই, এর নীচে কেউ রাজি হল না যেতে।
শুরু হল সিএনজি ভ্রমন, একেবারেই মেঠো পথের মধ্য দিয়ে যাত্রা। দুপাশে খেজুর গাছের সারি। চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন যে পৌছে গেলাম টের পেলাম না।
বীচে পৌছলাম ৩ঃ০০ টার একটু পরে। বীচে নেমে আমার প্রথম অনুভুতি ছিল এইরকম যায়গা বাংলাদেশে!!! আমি বাংলাদেশের অনেকগুলো সমুদ্র সৈকতে গিয়েছি কিন্তু এইরকম সমুদ্র সৈকত আর নেই বাংলাদেশে।
চারদিকে কেওড়া গাছের সাড়ি। সবুজ ঘাস গালিচা বিছিয়ে আছে। কেওড়া গাছের ধারালো শাসমূলের জন্য একটু সাবধানে হাটা লাগে। আর এর মাঝে ঘাসের মাঝখানে তৈরি হয়েছে এক অদ্ভুত নালা।জোয়ারের পানি যার মধ্যে ডুকে এক অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্যের অবতারনা করেছে। কেওড়া গাছ জোয়ারের সময় সমুদ্রের মধ্যেও অনেকটুকু চলে যায়।
এই বীচে লোকসমাগম তুলনামুলক কম। শান্ত ও নিরিবিলি এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশ।কিছুক্ষন ৪ বন্ধু মিলে আড্ডা দিলাম। কখন ২ ঘন্টা চলে গেল টের পেলাম না। এবার ফেরার পালা কারন সবাই ই দুরের পথের যাত্রী। আমার বন্ধুদের ঢাকার ৮ঃ০০ টার বাসের টিকেট কাটা ছিল তাই ৫ঃ০০ টার দিকে রওয়ানা দিলাম গুলিয়াখালী থেকে।
আরেকটা ব্যাপার হল সন্ধ্যার পর বীচ থেকে আসার সিএনজি পাওয়া যায় না।তবে এই অল্প সময়ে মন কেড়ে নিল বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর এই বীচ। ইনসাআল্লাহ খুব শীগ্রই আবার যাবো।