সকালে ঘুম থেকে উঠে কোন কাজ না থাকায় ফ্রেশ হয়ে এক কাপ কফি খাচ্ছিলাম। কফি খেতে খেতে ফেসবুক খুলতেই চোখের সামনে আমাদের পলিটেকনিক এর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কিছু পোস্ট সামনে আসলো। এবং তাদের আন্দোলনের মূল বিষয় ছিল "অটোপাশের দাবি" যেহেতু ইন্টারমিডিয়েট স্টুডেন্টদের অটোপাশ হয়েছে, তারাও অটোপাশের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছে। ইতিমধ্যেই আমরা জানি যে ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অটোপাশ দেওয়া হয়েছে এই মহামারিতে যাতে স্টুডেন্টদের ঘর থেকে বের না হতে হয়। কারোনার সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় সেজন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনেকেই বিষয়টিকে সমর্থন করেছেন। সমর্থন করাটাই স্বাভাবিক কোনো মা-বাবাই চায় না যে তার সন্তান আক্রান্ত হোক।
সরকার এটা বিবেচনা করেই অটোপাশ দিয়েছেন ছাত্রছাত্রীদের যেন বাইরে বের হতে না হয়। আমাদের যেহেতু জনসংখ্যা বেশি যার কারণে আক্রমণের সংখ্যা অনেক বাড়ার সম্ভাবনা থাকে যার কারণে আমাদের স্কুল কলেজ সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে। এটা স্বাভাবিক যে কোন বিষয়ে দ্বিমত থাকবে৷ অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে মজা হিসেবে দেখেছে কারণ এখন পর্যন্ত এমন ঘটনা ঘটেনি যে পরীক্ষা না দিয়েই পাশ। কিন্তু আজকে সকালে আমার সবথেকে বেশি অবাক লাগলো। যেহেতু পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে, ভ্যাক্সিনও দেশে এসে পৌঁছেছে সরকার এখন পরীক্ষা নিতে চাচ্ছে যেহেতু তাহলে ছাত্রছাত্রীদের কেন এই আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের অটোপাশ দেওয়া কোন স্থায়ী ব্যাবস্থা নয়। এইচএসসিতে অটোপাশ দেয়া হয়েছে এটা না হয় মেনে নিলাম। কিন্তু দেশের একজন ভবিষ্যৎ ইঞ্জিনিয়ার কিভাবে এইরকম একটা দাবি তুলতে পারে। একটা দেশকে সমৃদ্ধ করার জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের হাত সবথেকে বড়। দেশ গড়ার জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের মেথা দরকার, সেখানে তারা অটোপাশ দাবি করছে। তারা এটা কিভাবে দাবি করতে পারে সেটাই আমি ভেবে পাচ্ছি না।
যেহেতু অনেকদিন যাবৎ স্কুল কলেজ বন্ধ,সেহেতু তারা ক্লাস করার সুযোগ পায়নি, সেজন্য তারা এটা দাবী করতে পারে যে আমরা কোন ক্লাস না করে, সরাসরি পরীক্ষা দিতে চাই না কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে অটোপাশ দাবি করাটা তো খুবই লজ্জাজনক আমি মনে করি। হঠাৎ করেই যখন চোখের সামনে এটা চলে আসলো আমি আর এটা এড়িয়ে যেতে পারলাম না। এবং তাদের এই আন্দোলনের পক্ষে অনেক সমর্থক রয়েছে। খুব বেশি মানুষকে দেখছি না যে আন্দোলনের বিপক্ষে। হ্যাঁ খুব বেশি হলে প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী গুলো আছে তাদের অটোপাশ দেওয়া যায়। এর মূল কারণ হলো প্রথম দিকে আমাদের তেমন কোন প্র্যাকটিকেল ক্লাস নেই এবং তখন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টাল সাবজেক্ট গুলো খুব কম । তাই সেই হিসেবে তাদেরকে দেওয়া যেতে পারে কিন্তু তারপর থেকে যে সেমিস্টার গুলো রয়েছে সবগুলোই তেই প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস রয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ । তাই আমি মনে করি এই আন্দোলনটা মোটেও যুক্তিযুক্ত নয় ।
এখন দেখা যাচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা কিছুটা হাসির মুখে পড়ে গেছে। সবাই এখন আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কি নিয়ে মজা করছে কেউ গান লিখছে কেউ আবার মজার নাটক তৈরি করছে। আমি এখানে কোন তর্কে জড়াতে চাই না এখানে আমি শুধু আমার মতামত জানালাম একজন ইন্জিনিয়ারিং ছাত্রী হিসেবে।