আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা
এই প্রচন্ড গরমে আপনারা সবাই কেমন আছেন? বর্তমানে বাংলাদেশকে আর বাংলাদেশ মনে হয় না, মনে হয় যেন মরুভূমি। আজকে কিন্তু আমি কোনো ভিডিও আপনাদের সাথে শেয়ার করছি না। বা কোনো রান্নার রেসিপি ও আজকে শেয়ার করব না। আজকে আমি প্রকৃতি এবং আমাদের বর্তমান যান্ত্রিক জীবন নিয়ে কিছু কথা বলবো। কখনো কি ভেবে দেখেছেন আমাদের পৃথিবীতে আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের আসল কারণ কি?
আসলে কিন্তু আমরা নিজেরাই নিজেদের হাতে আমাদের পৃথিবীটাকে আস্তে আস্তে ধ্বংস করে ফেলছি । দুঃখিত আমি কোনো আবহাওয়াবিদ নই তবে আমার মনের কিছু কথা প্রকাশ করার ছিলো সেগুলো একটু আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। বর্তমানে আমাদের জীবনটা কত যান্ত্রিক হয়ে গেছে তাই না? বর্তমানে শহরে তো গাছপালা দেখাই যায় না।
শহরের কোলাহল, কলকারখানার কালো ধোঁয়া, রেল ইঞ্জিনের ধোঁয়া, যানবাহনের কালো ধোয়া এসব কিছুই পরিবেশ প্রচুর পরিমাণে দূষণ করে ফেলছে। শহরে যা গাছপালা ছিলো তাও হাইরাইজ বিল্ডিং এর আরালে লুকোচুরি খেলছে। বর্তমানে গ্রামও কিন্তু পিছিয়ে নেই! গ্রামীণ জীবনটাও অনেক বেশি যান্ত্রিক হয়ে গেছে। আগেকার দিনে খেয়াল করলে দেখা যেত প্রত্যেকটা বাড়ির সাথেই কম বেশি পুকুর ছিলো,ছিলো দিঘী, খাল। বর্তমানে সময়ের সাথে সাথে সেসব কিছু এখন বালি দিয়ে ভরাট করে দেওয়া হয়েছে। তার ওপরে নির্মাণ করা হয়েছে বড় বড় বিল্ডিং।গ্রামে এখন আর কেউ গরম লাগলেও বাড়ি থেকে বের হয় না,গাছের ছায়ায় শীতল পাটিতে বসে সেই বাতাস আর উপভোগ করেনা। এখন সবাই যান্ত্রিক জীবনে এসি, ফ্যান নিয়ে ব্যস্ত। আসলে আমরাই কিন্তু প্রকৃতির উপকার না করে উল্টে প্রকৃতির কাছ থেকে সবকিছু কেড়ে নিচ্ছি।
আজকালকার বাচ্চারা তো ভুলেই গিয়েছে বাইরে যে খেলার আনন্দ । এখন যান্ত্রিক জীবনের সবাই মোবাইল আর টিভি নিয়ে ব্যস্ত। এসির জীবন থেকে বাইরে এসে দেখুন বাস্তবতা কতোটা কঠিন। যারা দিন আনে দিন খায় তাদের কথা কি কখনো ভেবেছেন?? তাদের দিন কেমন কাটে এই প্রচন্ড গরমে?? এই প্রচন্ড গরমে এসি রুম থেকে বাইরে সামান্য কিচেনে রান্না করতে গেলেই জীবন যেন বের হয়ে যায়। তাহলে কি ভেবে দেখেছেন যারা দিনমজুর তাদের জীবন কিভাবে কাটে?? কতোটা কষ্টে আর দুঃখে তাদের দিন কাটে ?কাজের ফাঁকে যে তারা গাছের নিচে বসে শীতল ছায়ায় হাওয়া উপভোগ করবে তাদের কাছে সেই সময়টুকুই নেই, সেখানে ফ্যানের বাতাস তো বিলাসিতা মাত্র ! বর্তমানে তো তেমন পর্যাপ্ত গাছও দেখি না! গাছ লাগালে কিন্তু পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না আরো আমাদেরই অনেক উপকার হয়। একটু ভেবে দেখেছেন?
গাছ থেকে কিন্তু আমরা অনেক বেশি উপকার পাই! অনেক গাছ আছে যেগুলোর কাঠ কেটে আমরা ফার্নিচার বানাই। গাছ থেকে আমরা ছায়া পাই, অক্সিজেন পাই, গাছ না থাকলে কিন্তু আমাদের ত্যাগকৃত কার্বন ডাই অক্সাইড এর পরিমাণ পরিবেশে বেড়ে যায়। গাছ থেকে আমরা ফুল ফল পাই। সুতরাং আমাদের সবারই উচিত গাছ লাগানো এবং পরিবেশ বাঁচানো। আমাদের সকলের উচিত যান্ত্রিক জীবন ছেড়ে প্রকৃতিকে সুন্দর ভাবে উপভোগ করা। বর্তমানে শহরে দেখা যায় অনেকের শখের বসে ছাদ বাগান করেন।সেখানে দেখা মেলে অধিকাংশ হাইব্রিড গাছের। আমার কাছে মনে হয় অনেকটা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো।তারপরও এমন উদ্যোগ গ্রহণ করাই অনেক । যে কোনো গাছই কিন্তু আমাদের পরিবেশের জন্য উপকারী।অনেকেই আছেন যারা গাছ পছন্দ করেন না । আপনারা যদি ফুল গাছও লাগান তাহলেও সেই গাছে ফুল ফুটলে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে।
গাছের শোভা বৃদ্ধি হয় আর পরিবেশ ভালো থাকে। সুতরাং, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে আমাদের উচিত বেশি বেশি করে গাছ লাগানো এবং পরিবেশ বাঁচানো। গ্রামীণ মানুষের জন্য গাছ লাগানো কিন্তু অনেকটাই সহজ। গ্রামের উঠানে গাছ লাগানোর কোনো ঝামেলাই নেই। আর শহরের মানুষ তো টবে গাছ লাগায়। আমাদের পৃথিবীর বৈশ্বিক উষ্ণায়ন যদি এমন ভাবেই বাড়তে থাকে তাহলে কিন্তু সত্যিই আমাদের পৃথিবীটা একদিন মরুভূমিতে পরিণত হবে। সুতরাং পরিবেশ বাঁচানোর জন্য আমাদের প্রত্যেকের উচিত বেশি করে গাছ লাগানো।
আজকে অনেক বেশি কথা বলে ফেললাম। আজকে এ পর্যন্ত, আপনারা সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং বেশি করে গাছ লাগাবেন, আল্লাহ হাফেজ।