Shot on Xiaomi note 5AI
বাড়ি থেকে রাস্তায় বেরিয়ে দেখি একটা ছোট ছেলে, ১১/১২ বছর বয়সী হবে, হাতে লাঠি নিয়ে ধারুম ধুরুম আঘাত করছে মাটিতে, আমি এগিয়ে এসে বললাম,এত অস্থিরতা কিসের? কি হইছে?
এদিকে আসো।
লাঠি হাতে ঠান্ডা মেজাজে ছেলেটা এগিয়ে এলো। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কে তুমি, আগে তো দেখিনি, কোথায় আসছো, কার বাড়িতে?
ছেলেটা আমাদের বাড়ির পরের বাড়িটা দেখিয়ে বললো, আমি ঐ বাড়িতে বেড়াতে আসছি।
আমাদের প্রতিবেশীর বাড়িতে বেড়াতে আসছে, অথচ আমি তাকে চিনিনা। অবশ্য বেশ কিছু দিন হলো বাড়ির বাইরে বের হওয়া না৷ কারন বেশ কাজের চাপে বাড়ি থেকে বের হতে পারিনি। রুমে বসেই এই কয়দিন কাজ করতে হয়েছে। আর বাইরে প্রচন্ড শীত আমার মতো অলসের জন্য ভয়নায়ক রকম সুন্দর আবহাওয়া। সপ্তাহ খানের রুমের মধ্যে থাকলেও সমস্যা নাই, যদি না আমার আব্বু বকে বাইরে পাঠায়।
আমিঃ এবাড়ির কে তোমার কি হয়?
ছেলেটাঃ এবাড়ির কাদের আমার বোনকে নিয়ে আসছে।
আমি বুঝতে পারলাম এ ছেলে মতি কাকার ছেলের শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়। মতির ছেলের সাথে ভালোই মেশা হতো আগে এখন তেমন না। সম বয়সী ছেলে হিসেবে ভালো মেশা হতো। এলাকার কোন আয়োজনে একসাথে কাজ করতাম। এখন সবাই নিজেদের কাজে ব্যস্ত থাকায় আর তেমন মেশা হয়। তাই বিয়ে করেছে সেটাও জানি না। শুনেছিলাম যে বিয়ে করবে হয়তো বিয়ে করছে। ওদের বাড়িতেই আসছে হয়তো আজকে ওর শ্বশুড়বাড়ি থেকে।
আমি বুঝে-ও না বোঝার ভান করে বললাম কাদেরের এতবড় সাহস কই থেকে আসলো, সে তোমার বোনকে কোন নিয়ে আসছে। ওর হাড্ডি ভেঙে ফেলবো আমি।
আমার কথায় ছেলেটা হাসছে,হাসতে হাসতে অস্থির প্রায়। তারপর হাসি থামিয়ে বললো। আরে নিয়া আসছে মানে সে আমার বোনকে বিয়ে করেছে।
আমিঃ ও আচ্ছা, তাহলে তুমি কাদেরের শালা?
ছেলেঃ জ্বি
আমিঃ তাইলে তো তুমি আমার বেয়াই হও।
আসো বেয়াই বুকে আসো। বলে ছেলেটাকে বুকে জড়িয়ে নিলাম। তারপর কোলাকুলি। ছেলেটা অনেক আনন্দ পেয়েছিলো। তারপর কত রকমের গল্প, কেউ দেখলে মনে করতো আমরা বহুদিনের পরিচিত। আমি আসলে এমনি, ছোটদের সাথে আমার মিশতে অনেক ভালো লাগে। ওদের সাথে আড্ডা দিতে, ওদের কথায় মনে আলাদা প্রশান্তি পাওয়া যায়। এখনকার কিছু কিছু ছেলে পেলে আবার বেশ পাজি। কিন্তু আমি যখন ওদের সাথে এমন আচরণ করি তখন ওরাও আমার সাথে তাল মিলাতে থাকে। তখন ওদের পাজি গুলো আড়ালে চলে যায়।
ভালোবাসা ছড়িয়ে দেয়া উচিৎ চলতে চলতে, বলতে বলতে, শুনতে শুনতে। আপনি যাকে বেশি সম্মান দিবে সেখান থেকে সেরকমই প্রত্যাশা করতে পারবেন ঠিক ছোটদের স্নেহ করলে সেখান থেকে আপনি আপনার প্রত্যাশারও বেশি সম্মান আশা করতে পারবেন।
চলতে চলতে কত মানুষের সাথে দেখা হয়, আগ বাড়িয়ে পরিচিত হবার মজাটা কেমন অবশ্যই সবাই সম্পূর্ণ অপরিচিত কারো সাথে আগ বাড়িয়ে পরিচিত হয়ে দেখে নেবেন।