আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্য আজ অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। আগেকার দিনে প্রায় পতিটা গ্রামেই বিশেষ কোন উৎসব হলেই মেলা হতো আর পহেলা বৈশাখ তো মেলা হবেই। প্রতিটা মেলাতেই অন্যরকম আনন্দ হতো। তবে সব কিছু ডিজিটাল হয়ে যাওয়ার কারনে ও মানুষের জীবনযাত্রার মান আগের থেকে অনেক বেশি উন্নত হবার কারনে গ্রামীণ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। এসবের সাথসাথেই হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামের বিভিন্ন উৎসব।
![]() | ![]() |
---|
আজ থেকে ৩ দিন আগে হটাৎ করেই আমাদের বাড়ির সামনে বেশ কিছু বাশ ও কাঠের দোকান ও বেশ কিছু মানুষ দেখতে পেলাম। আমি তেমন একটা পাত্তা দেইনি। তবে সন্ধ্যা বেলায় মার কাছ থেকে জানতে পারলাম লোকগুলো এখানে মেলা করতে এসেছে। আমি শুনে অবার হয়ে গেলাম আমাদের এলাকায় মেলা! তবে পরের দিন সকালে দেখতে পেলাম দোকানগুলো রেডি হয়ে গিয়েছে। ঐদিন বিকাল থেকেই মেলা শুরু হবে তবে বাসার সামনে হবার কারনে আমি একটু আগেই গেলাম। গিয়ে দেখতে পেলাম বিভিন্ন রকমের দোকান। খাবারের দোকান থেকে শুরু করে হাডি পাতিল ও বিভিন্ন রকমের ঘর সাজানোর জিনিসপত্র। আমাদের গ্রাম বাংলার বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহি জিনিসপত্রও দেখতে পেলাম দোকান গুলোতে।
![]() | ![]() |
---|
এ ধরনের ঐতিহ্য আমাদের সামনে মধ্যে থেকে দিন দিন প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে তবে অনেকটা হারিয়ে গেলেও এর কিছুটা অংশ এখনো আমাদের মাঝে আছে। কিছু গ্রামীণ মানুষ এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছেন তাদের এই ঐতিহ্য ধরে রাখবার জন্য। এরকমই একজন মানুষের সাথে দেখা হলো আমার কিছুদিন আগে। অনার নাম ওয়াজেদ আলী। বয়স প্রায় ৭০ বছরের ওপরে হবে কিন্তু দেখলেই বোঝা যায় অনেক কাজের মানুষ। কাজ ছাড়া যেন থাকতেই পারেন না তিনি। মেলা ঘুরতে ঘুরতে জানতে পেলাম মেলার সব লোকজনের দলটা তারই।
![]() | ![]() |
---|
মেলার দোকান গুলোর প্রথম দিকেই তাকে পেয়ে গেলাম আমি। বড় এক কড়াইতে পিয়াজু ভাজছিলেন তিনি। তার দোকানাটি মূলত ভাজাপোড়ার দোকান। আমি তার কাছে গিয়ে তার সাথে একটূ কথা বলার৷ চেষ্টা করলাম। তার কাছে প্রশ্ন করে জানতে পারলাম তিনি এটা করেই তার জীবন চালান। তিনি প্রতি মাসে একটি করে নতুন গ্রামে যান ও পুরো মাস মেলা করে গ্রামীণ ঐতিহ্য গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেন ও নিজের জীবন চালান। তার সাথে কথা বলে খুব ভাল লাগলো অত:পর তার কাছের থেকে কিছু খাবার কিনে তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বাড়ি চলে এলাম।