প্রাপ্ত বয়স হওয়া মাত্রই জীবনের জৈবিক, মৌণ, গৌণ ও যৌন চাহিদার পথে ছুটে চলার অদম্য প্রয়াস প্রত্যেকের থাকা উচিৎ। কেননা, বেঁচে থাকতে হলে কখনো মাথা নিচু করে, অন্যের গোলামি করে, জীবনটাকে ছোট মনে করে থামিয়ে যাওয়ার নাম জীবন নয়। জীবন তো সেটাই,যা দুনিয়াতে টিকে থাকতে হলে এবং পরপারে শান্তিতে থাকতে হলে প্রয়োজন সেটার পিছনে লাগামহীন ছুটে চলা। এই জীবনে কখনো রোদ, কখনো বৃষ্টি আবার কখনো রাত নেমে আসে। এটা জেনে যারা এগুলোকে উপেক্ষা করে সামনের দিকে অতিবাহিত হয়, আমি মনে করি তারাই বুদ্ধিমান মানুষদের সিরিয়ালে।
মানুষের পিছনে লেগে থাকা মানে সে কখনো সামনে আসতে পারেনা, সে পিছনে পিছনেই পড়ে থাকবে, এটাই বাস্তবতা। সুতরাং, কে কি করলো? কে কি করতেছে এটা না দেখে না ভেবে নিজের জীবনটাকে কিভাবে তৈরী এবং মজবুত করা যায় সেদিকে ফোকাস দেওয়াটা জরুরী। দিনশেষে তারাই সফল, যারা অন্যকে নিয়ে না ভেবে, না হিংসে করে, নিজের জীবনকে ভালোবেসে নিজের ক্যারিয়ারের পিছনে সময় দিয়েছে তারাই সে চুরায় পৌছাতে পারে।
আসলে বাস্তবতা আরেকটি হলো, আমরা সবাই প্রায় কমবেশি এগুলো নিয়ে জানি, বুঝি। কিন্তু সময়ের আবর্তনে, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাই নিজের মাঝ থেকে। হারিয়ে যাই ভোগ বিলাসে। মনের খোরাক মিটাতে, চোখের চাহিদার ঘোচাতে মরিহা হয়ে পড়ি। সবকিছু জেনেও অবুঝের মতো নিজের মধ্যে থেকে বের হয়ে যাই। যেটা মোটেও কাম্য নয়। আমরা সজোরে মন থেকে চাইলেই সবকিছু হাতের মুঠোয় আনতে পারি। কিন্তু চাহিদা থাকা সত্তেও আমরা গা ছেড়ে নিয়ে অলসতার চাদরে ডুবে থাকতে ভালোবাসি।

balashighat, gaibandha.
যেমনটি ছবিতে দেখা যায়, মনের খোরাক মিটাতে এই করোনার মধ্যে, শঙ্কা জেনেও চলে গিয়েছি নদী দেখতে, চড় এলাকার অবস্থা দেখতে। সাথে কিছুটা রিফ্রেশমেন্ট এবং খোলামেলা পরিবেশে মুক্ত বাতাসের ছোয়ায় মন জুড়ানো এক মুহুর্ত, যেটারও অনেকটা দরকার রয়েছে। মাঝেমাঝে কর্মব্যস্ত এই জীবনের ফাঁকে কিছু সময় বের করে, প্রিয় এই দেশের সুন্দর কিছু যায়গায় গিয়ে মনটা ফ্রেশ এবং ক্লান্ত নিবারণ করাটা প্রয়োজন। কিন্তু শুধুমাত্র ঘোড়াঘুরি এগুলোর পিছনেই পড়ে থাকলে হবে না। জীবনের গতিতে চলতে বুদ্ধিদিয়ে চলা প্রয়োজন।
আজ বাংলাদেশের মানুষদের উন্নতি নাই। কারণ, 1. বুদ্ধি নাই 2. সাহস নাই। সেক্ষেত্রে যদি কিছু দেশের দিকে লক্ষ করি, জাপান, কোরিয়া, সিঙ্গাপুরের দেশগুলোতে মানুষের টাকার অভাব নাই, তারপরও তারা কর্মব্যস্ত জীবন নিয়ে ব্যস্ত। কখনো বসে বসে খেতে পছন্দ করেনা। কেউ যদি চাকুরী নাও করে, সে বসে বসে থাকেনা। হাত পা এবং মাথা দিয়ে খেলাধুলা করে। এইদেশগুলোর লোকজন সরকারি চাকুরীর চিন্তা করে না, তারা ব্যক্তি উদ্যোগে কর্মক্ষেত্র তৈরী করে এবং অপরকে চাকুরী দেয়। এভাবে তারা আজ দিনের পর দিন দেশের অর্থনৈতিক চাকাকে সচ্ছল এবং উপরে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।
আমরা চায়ের কাপে চুমু খেয়ে বলি, বিড়ি দে, পরিবেশটা খুব সুন্দর। অপরদিকে বুদ্ধিমানরা চায়ে চুমু দিয়ে বলে চা টা কি কি দিয়ে বানাইছে। সুতরাং, ক্রিয়েটিভ চিন্তাভাবনার অনেক দরকার এদেশের মানুষের। জীবনটাকে সাজিয়ে নেওয়া, বুদ্ধিদিয়ে এগিয়ে যাওয়া এবং জীবনকে ভালোবেসে পথচলার নাম জীবন।
সেদিন যদি ২০ কোটি শুক্রাণুকে পেছনে ফেলে সেই দৌড় প্রতিযোগিতায় চাম্পিয়ান হতে পারি, আজ কেনো পারবোনা? মুরগীর খোঁয়াড়ে না থেকে পৃথিবীকে জানান দিতে হবে, আপনি আমি পৃথিবীতে আসছি। যাই হোক, বাস্তবতা এবং পরিস্থিতি বুঝে এগিয়ে যাওয়াটাই আমাদের কাম্য। আসুন,জীবনকে ভালোবাসি, জীবনের প্রয়োজনে ছুটে চলি।