প্রিয়,
পাঠকগণ,
আশাকরি আপনারা সবাই ভালো আছেন।
আজ তিতলির জন্য মনটা কেন জানিনা খারাপ লাগছে। এখন বেশি কথা বলতে পারিনা ফোনে, কথা বললেই শুধু আমার কাছে আসতে চায়, খুব কান্না করে। মনটা খারাপ লাগে তখন। আসলে ও বাড়ি না থাকলে দিদি/দাদা কারোর ভালো লাগে না। তাতান ও খুব জ্বালায়। আর ওর পড়াশোনার ক্ষতি হয়। সব মিলিয়েই সবসময় আসা সম্ভব হয়না। তাই খারাপ লাগা গুলোকে মানিয়ে নিতেই হয়।
আজ ওর ছোটবেলার ছবি দেখছিলাম। মনে হয় এই তো সেদিন এলো, কবে কবে যে এত বড় হয়ে গেল বুঝতেও পারলাম না। ছোটো থেকেই সে বেশ দুষ্টু আর বড্ড আদুরে। অনেক কষ্টে ওকে পাওয়া তাই যেন সবার আদরের। ওর ছোটবেলা আমি একদম কাছ থেকে দেখেছি। তাই ওর বেড়ে ওঠা গুলো চোঁখের সামনে ভাসে।
তবে একটা বিষয়ে ও খুব ভালো ছিলো, মা কে ছাড়া থাকতো কিন্তু সেই ভাবে জ্বালাতো না, আসলে ভগবান বোধহয় এই ভাবেই তৈরী করে, মায়েরা চাকরী করলে বাচ্চারা অভ্যস্ত হয়ে ওঠে সবকিছুর সাথে। ওর ছোটবেলা মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি তে কেটেছে।
ওখানের কান্দি মহাকুমা হসপিটালের কোয়ার্টারে ওর বেড়ে ওঠা। দুটো ঘরের মধ্যেই ওর খেলা ধুলা দুষ্টুমি। মাঝে মাঝে দিদি ওকে পার্কে নিয়ে যেত। আমরা যখন যেতাম ওকে লুকিয়ে বাড়ি ফিরতে হতো। নাহলে খুব কান্না করতো, আসতে দিতে চাইতো না।ওকে নিয়ে ঘুরতাম। ওর সাথে খেলতাম। এতো ভালো সময় ছিলো যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
আজ ছবি গুলো দেখে অজান্তেই চোঁখের কোণে জল চলে এলো। বুকের ভেতরটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে, গলা কেমন যেন আটকে আসছে, মনে হচ্ছে যেন সময়টা ফিরে যাক আগের জায়গায়। আধো আধো গলায় মিমি মিমি বলে ডাকতে ডাকতে ছুট্টে এসে কোলে উঠে গলা জড়িয়ে ধরুক। আর আমিও জাপটে ধরে অনেক আদর করি।
জানি এর কোনোটাই সম্ভব নয়,সময় তার নিজের স্রোতে বয়েই চলে, আর আমরাও ভেসে চলি সেই স্রোতে। কষ্ট হয়, দুঃখ হয়, কিন্তু চলতে হয়, যতদিন না জীবন শেষ হয়। তিতলি হয়তো আমার কাছে নেই কিন্তু আমার মনে সবসময় আছে। আমি জানি যত বড়ো হবে দূরত্ব বাড়বে, আজ আমার কাছে আসার বায়না করছে, একটা দিন আসবে আসতেই চাইবে না। তখন কষ্ট হবে, অনেক অনেক কষ্ট হবে, কিন্তু ভালোবাসা এতটুকুও কমবে না।
যাইহোক, ভালো থাকুক, বড় হোক, ভালো মানুষ হোক, এটুকুই চাই। ওর ছোটবেলার কিছু ছবি শেয়ার করছি আশাকরি দেখে আপনাদের ভালোই লাগবে। ভালো থাকবেন সবাইকে নিয়ে।শুভরাত্রি।