কবুতর হলো একধরনের জনপ্রিয় গৃহপালিত পাখি ।কবুতরকে আমরা অনেকেই অনেক নামে চিনি বা ডেকে থাকি।যেমন: কবুতর, পায়রা, কপোত, পারাবত।অনেক অনেক অঞ্চলে আঞ্চলিক ভাষায় বলে থাকে ছোট পক্ষী। গৃহপালিত কবুতরের বৈজ্ঞানিক নাম ইংরেজিতে Columba livia domestica .
উইকিপিডিয়ার মতে সারা বিশ্বে প্রায় ২০০ জাতের কবুতর পাওয়া যায়। তার মধ্যে ৩০ জাতের কবুতর আমাদের দেশে পাওয়া যায় (সংগ্রহীত)। গোলা জাতের কবুতরকে মূলত আমরা দেশি কবুতর নামেই চিনি।।আমাদের দেশের মানুষ এই কবুতর বেশি পালন করে থাকে এবং সেই সঙ্গে এই কবুতরের মাংস খেতে বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
এই তালিকায় আমিও অন্তর্ভুক্ত। আমাদের বাড়ির উঠানে কবুতরদের জন্য ২টি বড় বড় ঘর তৈরি করা আছে। আমাদের প্রায় ২৫ জোড়া গোলা জাতের কবুতর অর্থাৎ দেশি কবুতর রয়েছে। আমি যখন ক্লাস ৫ এ পড়ি তখন থেকে আমাদের বাড়িতে কবুতর পালন করা হয় শখের বশে। এখনও কবুতর পালন করা হচ্ছেই।
সব কবুতরই আমার প্রিয়। তবে সাদা কবুতর আমার বেশি ভালো লাগে। সাদা কবুতর যেনো মনে হয় চোখের প্রশান্তি। কবুতর পালনে সব থেকে চিন্তার বিষয় কবুতর রোগে আক্রান্ত হলে ,কাক,বেজি, বিড়ালের উপদ্রবে। রোগে আক্রান্ত হলে তখন যথাযথ ব্যাবস্থা না নিলে অন্যান্য কবুতরগুলো সংক্রামিত হয়ে মারা যেতে পারে। তাই ২-১ টি কবুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পশুডাক্তার এর শরণাপন্ন হওয়া উচিত। কাক সাধারণত কবুতরের বাচ্চার প্রতি বেশি আকৃষ্ট থাকে। তাই কবুতরের বাচ্চা হলে আমরা বেশি সচেতন ও খেয়াল রাখি কবুতরের ঘরগুলোর দিকে। তাই বেজি ও বিড়ালের জন্য খোপ অনেকটা ওপরে নির্মাণ করা হয়েছে।
মাঝে মাঝে কিছু সময় কবুতর নিয়ে বিপাকে পরতে হয়। এর কারণ আমাদের কিছু কবুতর অন্য কবুতরের সাথে জোড়া বেঁধে চলে যায়।পরবর্তীতে ওদের খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে।মাঝে মাঝে আমাদের বাড়িতেও অনেক কবুতর চলে আসে। অনেকে খোঁজ করতে আসে।খোঁজ মিললে নিয়ে যায়।পূর্বে কবুতরকে সংবাদবাহক হিসেবে ব্যবহার করা হতো। কবুতর দিয়ে প্রতিযোগিতা করানো হতো, এখনও হয়। ইচ্ছে আছে দেশি কবুতর এর পাশাপাশি আরও ভিন্ন ভিন্ন জাতের কবুতর পালন করা। কবুতর পালন এখন শখ ও বিনোদনের মধ্যে না রেখে অনেকই লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করেছে। কিন্তু আমাদের কবুতর পালন করা সম্পূর্ণই শখ করে করা।
বাড়িতে ঢুকেই অনেকই বলে কবুতরের পালনে আমাদের বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে।একসাথে অনেকগুলো কবুতর দেখতেও অনেক ভালো লাগে।একসাথে উড়ে যাওয়া ,একসাথে নেমে এসে খাবার খাওয়া এ যেনো এক মনোরম দৃশ্য। বর্তমানে আমি চাকরিসূত্রে ঢাকায় অবস্থান করার কারণে আম্মু আর ছোটভাই মিলে আমাদের কবুতরের দেখাশোনা করে থাকে। বাড়ি গেলে আমিও টুকটাক দেখাশোনা করি আমার শখের কবুতরদের।